রোজা থাকা অবস্থায় মেজাজ খারাপ হওয়ার বৈজ্ঞানিক কারণ কি? কিভাবে এটা কন্ট্রোল করা যায়?
রোজা থাকা অবস্থায় মেজাজ খারাপ হওয়ার বৈজ্ঞানিক কারণ কি? কিভাবে এটা কন্ট্রোল করা যায়?
কয়েকটি কারণে মুডসুইং এর অনুভূতি তৈরি হতে পারে-
১। ক্যাফেইন আসক্তিঃ
যাদের চা-কফির আসক্তি আছে, রোজা থাকা অবস্থায় শরীরে ক্যাফেইন না যাওয়ার কারণে কিছুটা এরকম হতে পারে।
২। অপর্যাপ্ত ঘুমঃ
রাতে ঘুমের কমতি এবং সেটা পোষানোর জন্য দিনের বেলা ঘুমানো শরীরের বায়োলজিক্যাল ক্লক এর কিছুটা পরিবর্তন করতে পারে। ফলে এরকম হতে পারে।
৩। শারীরিক উপসর্গঃ
রোজায় কিছুটা সময় কিছু ছোটখাটো সমস্যা দেখা দেয় যেমন- পেটে গ্যাস, বদহজম, দুর্বলতা, মাথাধরা, অলসতা ইত্যাদি।
৪। কিটোন বডিঃ
রোজা থাকার ফলে গ্লুকোজ শুন্যতায় শরীর কিটোন বডি তৈরি হয় যা আমাদের ব্রেইনকে প্রোটেক্ট করে। তবে এরা মাঝে মাঝে মুড সুইং এর কারণ হতে পারে।
৫। BDNF প্রোটিনঃ
এটা ব্রেইনের জন্য অত্যন্ত উপকারী। রোজা অবস্থায় এই প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। যেহেতু এটি ব্রেইনের নিউরনের উপর কাজ করে, মুড সুইং এর জন্য এই জিনিসও কিছুটা দায়ী।
কিভাবে কন্ট্রোল করবেন?
১। পর্যাপ্ত সময় ঘুমের রুটিন। দিনের বেলা ঘুমানোর পরিকল্পনা না করে, যতটা পারা যায় রাতে বেশি সময় ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
২। সেহরিতে স্বাস্থ্যকর খাবার খান যেমন- লাল চালের ভাত, পাতা যুক্ত শাক সবজি, ফলমূল ইত্যাদি। পেটে গ্যাস হতে পারে এরকম খাবার (ভাজা-পোড়া) পরিহার করুন। চিনি যুক্ত খাবার, সাদা ভাত/রুটি, পিজা পরিহার করুন। ভিটামিন বি, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফলিক এসিড যুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন, যেমন- খেজুর, মিষ্টি আলু, (যাদের ডাইবেটিস নাই), কলা, বীনস, পালং শাক, ডার্ক চকলেট ইত্যাদি।
৩। সেহরি এবং ইফতারে পর্যাপ্ত পানি পান করুন, পানি জাতীয় সবজি/খাবার খান।
৪। হাল্কা ব্যায়াম শরীরকে নেগেটিভ এনার্জি থেকে সুরক্ষিত রাখে, কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং মুড ভাল রাখে।
রমজানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল আত্ম-নিয়ন্ত্রণ এবং পুরো সময় জুড়ে শান্তি ও সংযম বজায় রাখা। ধন্যবাদ।
Sabbir Ahmed
পি এইচ ডি গবেষক, নেদারল্যান্ড
No comments