নিমের খৈলের উপকারিতা ও ব্যবহার পদ্ধতি।
নিমের খৈলের উপকারিতা ও ব্যবহার পদ্ধতি।
নিম অতি পরিচিত একটি নাম। কোনও কিছুর স্বাদ তিতা হলেই সঙ্গে সঙ্গে আমরা নিমের সাথে তুলনা করি। কিন্তু তিতা হলেও নিম অতি প্রাচীনকাল হতে নানাভাবে নানাকাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নিম গাছের নির্মল হাওয়া যেমন উপকারী তেমনি এ গাছের বিভিন্ন অংশ ঔষধ পাতা, ফুল, ফল ও ছাল আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে পঞ্চামৃত নামে পরিচিত। আধুনিক এ যুগে নিমের ডাল যেমন দাঁতন হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে তেমনই কৃষি ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়েছে।
নিমের খৈলের উপকারিতা :
* নিমের খৈল মাটির উর্বরতা শক্তি বাড়ায়, ক্ষতিকর পোকা দমন করে এবং ছত্রাকনাশক হিসাবে এক যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করে থাকে।
* নিম খৈলে যে সকল উপাদান সমূহ রয়েছে তা হলো পটাশিয়াম- ১% থেকে ২%, নাইট্রোজেন- ২% থেকে ৫.০%, ফসফরাস-১% থেকে ৩%, সালফার- ০.২% থেকে ২.৫%, কার্বন- ১.২%, ম্যগনেশিয়াম- ০.৭৫% এবং ক্যালসিয়াম- ০.৭৭%।
* নিম খৈল জৈব সার মাঠ ফসল, সবজি, ফুল ও ফল গাছের শিকড় নিমোটোডস দমনে, সাদা পিঁপড়া থেকে রক্ষার খুবই কার্যকরী এবং প্রায় ৬ প্রজাতির মাটির পোকা এবং উই পোকা দমনে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
* গবেষণায় দেখা গেছে নিমের খৈল মাটির বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া নাইট্রোজনীয় যৌগগুলিকে নাইট্রেোজেন গ্যাসে রূপান্তর করতে বাধা দেয়।
* গাছের শিকড় বৃদ্ধি করার জন্য মাটির জমিন, পানির ধারণক্ষমতা এবং মাটির বায়ু চলাচল স্বাভাবিক রাখে।
মাটি শোধনের জন্য নিমের খৈল ব্যবহৃত হয় যা মাটিকে সমৃদ্ধ করে এবং নাইট্রোজেনের ক্ষতি হ্রাস করে।
* নিমের খৈল পরাগবাহী, মৌমাছি, পাখি, গবাদি পশু এবং মানুষের জন্য নিরাপদ।
* ইউরিয়া সার মাটি থেকে উঠে নষ্ট হওয়া বন্ধ করে এবং দীর্ঘদিন মাটিতে ধরে রাখে ফলে গাছ বেশি দিন ধরে সম্পূর্ণ সার গ্ৰহন করতে পারে । অনেকটা প্রাকৃতিক সারের মতোই নিমের খেল কাজ করে।
নিম খৈল পোকার হরমোন প্রক্রিয়া এবং বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে থাকে।
* নিমের খৈল সবচেয়ে বেশি কাজ করে থকে পোকা এবং অন্যান্য ক্ষতিকর পতঙ্গ গুলো যখন ছোট থাকে এবং সম্পূর্ণ ভাবে রূপান্তরিত হওয়ার আগেই তা নিয়ন্ত্রন করে ফেলে।
নিম খৈল গাছে ব্যবহার পদ্ধতিঃ
* ১৫ দিন পরপর নিম খৈল ১২ ইঞ্চি টবের জন্য ১ থেকে ১.৫ মুঠ এবং ড্রামে ৩ থেকে ৪ মুঠ টবের বা ড্রামের চারপাশের মাটি ঝুরঝুরে করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে ।
* ১০ লিটার পানিতে ১ কেজি নিম খৈল ভালোভাবে মিশিয়ে ৭ থেকে ১০ দিন রেখে দিতে হবে।
প্রতি দিন একটি কাঠি দিয়ে ভালো করে নেড়ে দিতে হবে।
* ৭ থেকে ১০ দিন পর এই খৈল মিশানো পচানো পানি থেকে এক লিটার পানি নিয়ে ১০ লিটার ফ্রেশ পানির সাথে ভালো মতো মিশিয়ে গাছে ব্যবহার করা যাবে।
গাছের উপরের পোকা ধ্বংসের জন্য খৈল ভেজানো পানি ছেঁকে গাছে স্প্রে করে দিলে উপকার পাওয়া যাবে।
No comments